রোজায় স্বাস্থ্য ঠিক রাখার উপায়

চলতি সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে এক রোজা। ধার্মিক মুসলমানদের দিনে পানাহার বন্ধ থাকবে এক মাস। আর এগারো মাস একভাবে আর এই এক মাস অন্যভাবে জীবন যাপনে এ সময় অনেকেই ভোগেন স্বাস্থ্য সমস্যায়।

তবে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু সচেতনতা ও সতর্কতা মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা মোকাবেলা করতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতামতের আলোকে জেনে নিন রমজানে স্বাস্থ্য ঠিক রাখার উপায়:

১. ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়া

অনেকে মনে করেন ইফতারে ভাজা পোড়া না থাকলে ইফতারই হবে না। কিন্তু দিনভর অভুক্ত থাকার পর ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত, গরম খাবার পেটে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। পেট জ্বালাপোড়া করতে পারে।

এসব মুখরোচক খাবারের বদলে চিড়া-দই, লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, নুডুলস, নরম খিচুড়ি ইত্যাদি খেতে পারেন। সঙ্গে সবজি, ফল, সালাদ, মাছ বা মাংস বা ডাল বা ডিম থাকবে।

২. সেহরি খাওয়ার অভ্যাস করা

ফজরের আজানের কিছু আগে সেহরি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটাই সঠিক অভ্যাস। এ সময়ে সেহরি খাওয়ার ফলে ফজরের নামাজটাও পড়া হয়ে যাবে। তাছাড়া দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবারও এটি।

তবে অতিরিক্ত খাবেন না। পরিমিত খাদ্যের একটি তালিকা অনুসরণ করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। শর্করা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, আঁশ জাতীয় সবজি, ফল ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। কারণ এ জাতীয় খাবার ধীরে ধীরে হজম হয়। ফলে সারাদিন সতেজ থাকতে সহায়তা করে।

৩. শীতল স্থানে অবস্থান করা

দিনের সবচেয়ে গরম সময়টিতে শীতল স্থানে থাকার চেষ্টা করুন। হতে পারে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি। শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা যথাসম্ভব কমিয়ে আনুন। সম্ভব হলে নিয়মিত বিরতিতে বিশ্রাম নিন।

৪. ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন

সন্ধ্যার দিকে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় অর্থাৎ চা, কফি বা সোডা জাতীয় পানীয় বা কোল্ড ড্রিংস যেমন কোক, পেপসি ইত্যাদি পান করবেন না। যেখানেই থাকুন বেশি করে পানি পান করুন। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে বেশি করে পানি পানের অভ্যাস করুন।

৫. অন্তত সাত বার ফলমূল খান

ফলমূল শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এগুলো শরীরের ভিটামিন, মিনারেল এবং পানির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। তাই সারাদিন রোজা রাখার পর ফলমূল খাওয়া উচিত। রোজার মাসে প্রতিদিন অন্তত সাত বার ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি পরিবেশনে যা থাকতে পারে:

ক. আধা কাপ (১২৫ মিলি) ফলমূল বা সবজি, কিংবা ফলের জুস

খ. এক কাপ (২৫০ মিলি) সবজি বা সালাদ

গ। একটি ফল

৬. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা

নিয়মিত হাত ধোঁয়ার অভ্যাস করুন। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। কারো সর্দি-কাশি বা হাঁচি হলে সাবধান থাকুন। কারণ এর মাধ্যমে আপনার শরীরে ভাইরাস জ্বর বা এ জাতীয় কোনো রোগের জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে। আর ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করুন।

৭. পর্যাপ্ত ঘুম

পর্যাপ্ত ঘুমের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা সাত থেকে আট ঘণ্টার কম ঘুম আপনার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেবে।

৮. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

অন্তত আট থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন। ইফতারের সময় থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ করুন। তবে চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৯. ভারী কাজ বর্জন

রমজান মাসে রোজা রাখার ফলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই রোজা রাখার সময়টাতে ভারী কাজ বর্জন করুন।

১০. ধীরে ধীরে খাবার খান

সারাদিন খাবার না খাওয়ায় রোজার মাসে শরীরের পুষ্টির চাহিদা থাকে আলাদা। তাই ইফতারে একসঙ্গে অনেক কিছু খাবেন না। ধীরে ধীরে খান। কিছু খেজুর এবং পানি দিয়ে ইফতার শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে অন্য খাবারগুলো খান।

এডিটর-ইন-চিফ : মাহমুদ হাসান সোহেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আবু বকর সিদ্দিক সাগর
নিউজরুম মেইল: khulnanews24@gmail.com এডিটর ইমেইল : editor@khulnanews.com
Khulna Office : Chamber Mansion (5th Floor), 5 KDA C/A, Jessore Road, Khulna 9100,
Dhaka Office : 102 Kakrail (1st Floor), Dhaka-1000, Bangladesh.
কপিরাইট © 2009-2020 KhulnaNews.com