লাফিয়ে বাড়ছে আলু মরিচ পেঁয়াজের দাম
বাজারে অধিকাংশ সবজির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলুর দাম। কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজ এখনও ঝাঁজ ছড়াচ্ছে। এতদিন আলু ভোক্তাদের স্বস্তি দিলেও দাম এখন নাগাল ছাড়িয়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে এর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। একই সাথে রেকর্ড সময় ধরে নাগালের বাইরে রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণেই বাজারের এমন গতি।
নগরীর বেশিরভাগ বাজার ও দোকানে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৮ টাকায়। বেশ কিছুদিন থেকেই এ দামে বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে গত মৌসুমে উৎপাদন কম হওয়ার কথা বলছেন বাজার-সংশ্নিষ্টরা। তারা বলছেন, আগের মৌসুমগুলোর চেয়ে গত মৌসুমে প্রায় ২০ লাখ টন আলু কম উৎপাদন হয়েছে। একই সঙ্গে করোনা মহামারি এবং বন্যা, বৈরী আবহাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে সব ধরনের সবজির দর অনেক বেড়ে যায়। তখন আলুর ওপর চাপ তৈরি হয়। এ বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে আলুর নতুন মৌসুম আসার আগে চড়া দামে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা সংক্রমণের শুরুতে চাল-ডালের সঙ্গে বেশিরভাগ পরিবার আলু কিনে মজুদ করে। এতে চাহিদা আরও বেড়ে যায়। তখন প্রথম ধাপে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় ওঠে। এরপর বৈরী আবহাওয়া ও বন্যার কারণে সবজির দাম অস্বাভাবিক বাড়ে। কয়েক দফায় তখন আলুর দাম বেড়ে ৪০ টাকায় ওঠে। এখনও নগরীর বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বড় বাজারের বিক্রমপুর ভান্ডারের আলু ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া বলেন, এবার আলুর মৌসুমে কৃষক দাম না পেলেও যারা সংরক্ষণ করেছেন তারা ভালো মুনাফা তুলেছেন। সবজির বাজার চড়া এবং আলু উৎপাদন কম হওয়ায় বছরজুড়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আলুর দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। আর রকমভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ ও ৬০ টাকা দরে। একই অবস্থা পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও। সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও কমেনি পেঁয়াজের দাম। বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকা কেজি।
এদিকে শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, বরবটির সঙ্গে নতুন করে ১০০ টাকা কেজির তালিকায় নাম লিখিয়েছে উস্তে। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাস ধরেই ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। আর উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকার মধ্যে। বরবটির কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। বেগুনও গত সপ্তাহের মতো ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শুধু এ সবজিগুলোই নয় সকল সবজির দামই নাগালের বাইরে। ৫০ টাকার নিচে কোন সবজিই নেই বাজারে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের বিষয়ে নগরীর সন্ধ্যা বাজারে আসা আব্দুর রহমান বলেন, বাজারে এসে মোটেও শান্তি পাই না। সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। ১০০ টাকার সবজি দিয়ে এক বেলাও হয় না। শাক সবজির এতো দাম হলে খাব কি?
টুটপাড়ার বাসিন্দা তাবারুল ইসলাম বলেন, বাজারে আসলেই শুনি কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে আমাদের পক্ষে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।