কোনো কোটার দরকার নাই: প্রধানমন্ত্রী
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন, এই পদ্ধতি থাকলে বারবার আন্দোলন হবে, বারবার মানুষের কষ্ট হবে। তাই কোটা না থাকাই শ্রেয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত রবিবার থেকে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক জানতে চেয়েছিলেন সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে তার অবস্থা কী। আর প্রধানমন্ত্রী এটা নিয়ে কথা বলেন ১৫ মিনিটের মতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংস্কার করতে গেলে, কয়দিন পর আরেক দল এসে বলবে আবার সংস্কার চাই। কোটা থাকলেই হবে সংস্কার। আর না থাকলে সংস্কারের কোনো ঝামেলাই নাই। কাজেই কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নাই।’
‘আমাদের কেবিনেট সেক্রেটারি তো আছে, তাকে আমি বলেই দিয়েছি, সংশ্লিষ্টদেরকে যাদের নিয়ে বসে কাজ করবে। এবং তারা দেখবে।’
‘কিন্তু আমি মনে করি এই আন্দোলন বারবার হবে। বারবার শিক্ষায় সময় নষ্ট হবে। এই যে পরীক্ষা নষ্ট হলো।’
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে পাঁচ ধরনের কোটা আছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং এক শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা রয়েছে। ১৯৯০ সালের পর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের ইন্ধনে আন্দোলনে নামার চেষ্টা হয়। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। তবে সম্প্রতি কোটা ১০ শতাংশে নমিয়ে আনার দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে’ আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
গত ৮ এপ্রিল শাহবাগ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ঢাকার পাশাপাশি ঢাকার বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ শুরু করে। আর সোমবার সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এক মাসের মধ্যে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার কথা জানানোর পর ছাত্ররা তা মেনে ৭ মে অবধি আন্দোলন স্থগিত করে।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ছাত্ররা আবার আন্দোলনে ফেরে। আর আজ সকালে সংবাদ সম্মেলনে সাত দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণার দাবি করে তারা। এর মধ্যে সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সরকারি চাকরিতে কোটা থাকবে না বলে জানান। আর কিছুক্ষণ পর ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। ততক্ষণ যেন ছাত্ররা ধৈর্য ধরে।