অবশেষে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছালো খালিশপুরে

এ এইচ হিমালয়:: অবশেষে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছেছে খুলনা মহানগরীর খালিশপুর গোয়ালপাড়া ও নিউজপ্রিন্ট মিল এলাকায়। গত ৪ সেপ্টেম্বর নতুন পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস পৌঁছালো খুলনার শিল্পাঞ্চলে। অবসান ঘটলো খুলনাবাসীর গত কয়েক যুগের প্রতীক্ষার।
তবে এখনই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই গ্যাস ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রথম পর্যায়ে নগরীর খালিশপুরে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিসিএল) ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিকভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে নিউজপ্রিন্ট মিলের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। আপাতত বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়া অন্য কোথাও গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ডিজেল দিয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ পরে ২২ টাকা। গ্যাস ব্যবহার করলে এই খরচ কমে দাঁড়াবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা।
পাইপলাইনে গ্যাসের জন্য কয়েক যুগ ধরে আন্দোলন করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর পেট্রোবাংলার অধীনে ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস বিতরণ সেল’ গঠন করা হয়। কাজ শুরু হয় এই অঞ্চলে গ্যাস পৌঁছানোর।
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে দুটি প্রকল্পের আওতায় এক দশক কাজ করার পর ২০১৬ সালের মধ্যে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন লাইন পৌঁছে যায়। এরপরই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও শিল্প কারখানা পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ২০১৬ সালের ৩০ জুন সরকার গ্যাস বিতরণ প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে নগরীর ভেতরের শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সংযোগ প্রদানের উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
পদ্মার এপারের ২১ জেলায় গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ‘সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি’। কোম্পানি থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মূল প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় গ্যাস বিতরণ প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে যায়। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ শিল্প কলকারখানায় গ্যাস লাইন বসাতে ছোট কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকা এবং অর্থ সংকটে তা’ বাতিল হয়ে যায়।
২০১৭ সালে খালিশপুরের গোয়ালপাড়ায় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব দেয় এনডব্লিউপিসিএল। মূলত তাদের অর্থেই গ্যাস পাইপলাইন বসানোর প্রস্তাব অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আড়ংঘাটা জিটিসিএলের সিটি গেট স্টেশন (সিজিএস) থেকে নিউজপ্রিন্ট মিল ও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নগরীর আড়ংঘাটা থেকে গোয়ালখালী সড়কের পাশ দিয়ে নিউজপ্রিন্ট মিল ও গোয়ালপাড়া পর্যন্ত নতুন পাইপলাইন বসানো হয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর এই পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। সরবরাহের দিন লাইনে গ্যাসের চাপ ছিলো ২৮০ পিএসআই (প্রেসার পার স্কয়ার ইঞ্চি)। সাধারণত বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে ১৫০ পিএসআই হলেই চলে।
তিনি বলেন, খুলনার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হবে। এখন তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রস্তুত করলে সেখানে সংযোগ দেওয়া হবে।
এনডব্লিউপিসিএলের নির্বাহী প্রকৌশলী এজাজ মামুন পূর্বাঞ্চলকে বলেন, প্রথম পর্যায়ে গোয়ালপাড়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। নিউজপ্রিন্ট মিলের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৩ বছর। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে তারপর সংযোগ দেওয়া হবে। তবে গোয়ালপাড়ায় পিডিবির একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। তারা যদি চায় তাহলে আগামীবছর থেকেই এই লাইন থেকে গ্যাস নিতে পারবে।

এডিটর-ইন-চিফ : মাহমুদ হাসান সোহেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আবু বকর সিদ্দিক সাগর
নিউজরুম মেইল: khulnanews24@gmail.com এডিটর ইমেইল : editor@khulnanews.com
Khulna Office : Chamber Mansion (5th Floor), 5 KDA C/A, Jessore Road, Khulna 9100,
Dhaka Office : 102 Kakrail (1st Floor), Dhaka-1000, Bangladesh.
কপিরাইট © 2009-2020 KhulnaNews.com