রূপসায় মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি
রূপসা উপজেলার ইলাইপুর গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্র ও মুদি দোকানী মুসা শিকদার হত্যা মামলায় ৪ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া তাদের ১০ বছরের কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত চার আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামিরা হলেন, বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, রাজু শিকদার ও নুহু শেখ। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি সিরাজ শিকদার ও তার ভাই জসিম শিকদারকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীরা জানান, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে রূপসা উপজেলার আঠারোবেঁকী নদী থেকে পুলিশ মুসা শিকদারের মরদেহ উদ্ধার করে। মুদি দোকানে বাকি খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে মুসাকে আসামিরা শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনায় নিহতের পিতা মুস্তাকিম শিকদার ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি রূপসা থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মুক্ত রায় চৌধুরী ৬ জনকে আসামি করে ২০১৯ সালের ৩০ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। নিহত মুসা শিকদার ইলাইপুর গ্রামের মোস্তাকিম শিকদারের ছেলে।
এদিকে, খুলনা জেলা বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে গত ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা হতে ভোর পাঁচটার মধ্যে রূপসা থানার আলাইপুরের মোস্তাকিম শিকদারের ছেলে মুসা শিকদার(১৬) কে তার বাড়ির পাশর্^বর্তী মুদি দোকান থেকে তুলে নিয়ে হত্যার পর হত্যাকারীরা আঠারবেঁকি নদীতে লাশ ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা রূপসা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে রূপসা থানার অপমৃত্যু মামলা নং-১৭/১৮ রুজু করা হয়। পরে মুসা হত্যার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা রুজু না হওয়ায় নিহতের মা রশিদা বেগম (৪০) খুলনার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর নালিশি মামলা দায়ের করেন। আদালত এ বিষয়ে হত্যা মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলে রূপসা থানায় মামলা (নং-১২, তারিখ-১৫/০১/২০১৯) রুজু হয়। মামলার পর খুলনার পুলিশ সুপার এস.এম. শফিউল্লাহ্ বিপিএম সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখার ওপর ন্যস্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই মুক্ত রায় চৌধুরী।
একটি চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ সুপারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে ও নিদের্শনায় এই চাঞ্চল্যকর ক্লুলেজ হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। মামলার ঘটনায় জড়িত আসামিদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার বিষয়ে হত্যাকান্ডের প্রায় চার মাস পরে রুজু হওয়া হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তি নির্ভর তদন্তের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে আসমিদের অবস্থান সনাক্তের মাধ্যমে চাঞ্চলকর এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষে এজাহার নামীয় আসামি বনি আমীন শিকদার (২০), রাহিম শেখ (২১), রাজু শেখ (২০), নুহু শেখ (২৭), জসিম সিকদার (৫৯), সিরাজ সিকদার (৫২) এর বিরুদ্ধে গত বছর(২০১৯) ৩০ মে মামলার তদন্তকারী অফিসার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি বিচার শেষে বুধবার বিচারক ওই রায় প্রদান করেন।
অপরদিকে, ভিকটিম মুসা শিকদারের মা এবং উক্ত মামলার বাদী রশিদা বেগম (৪০) রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।