‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ভারত’
ভারত সফরে গিয়ে বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে সে দেশের ‘সবার’ প্রত্যাশার কথা জেনে এসেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার এই কথা জানিয়েছেন। গত ২২ জুলাই এরশাদের নেতৃত্বে ভারত সফরে যান জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে দেখা করেন এরশাদ। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে চার দিনের এই সফর নিয়ে বৃহস্পতিবার বনানীতে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন হাওলাদার।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের এই সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। ভারতের নেতারা সবসময়ই বাংলাদেশের সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করেছেন।’
জাতীয় নির্বাচনের বছরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দল ভারত সফর করেছে। এর বাইরে ২০ দলের শরিক এলডিপির সভাপতি অলি আহমদও ভারত সফর করেছন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা কথা আছে। বিএনপি এতদিন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতের স্বার্থে’ কাজ করার জন্য অভিযোগ করে আসছে। তবে জুনে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ‘নতুন সম্পর্কের’ বার্তা নিয়ে ভারত সফর করেছ। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে ভোট নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানিয়ে এসেছে তারা।
সব দলের ভারত সফর নিয়েই সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা আছে। সব শেষ এরশাদের সফর নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জন।
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘এ সফর নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা, জল্পনা-কল্পনা ও ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তাই ভারত সফর নিয়ে জাপার অবস্থান পরিষ্কার করতেই এই প্রেস ব্রিফিং।’
তবে লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের কোন প্রশ্ন গ্রহণ করেননি জাতীয় পার্টির নেতা। ফলে নিজে থেকে গণমাধ্যমকর্মীরা কিছু জানার সুযোগ পাননি।
জাতীয় পার্টির শাসনামল থেকেই ভারতের সেঙ্গে সম্পর্ক ‘অনেক ভালো’ ছিল জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘বর্তমানেও সে সম্পর্ক আরও গভীরতর হচ্ছে।’
হাওলাদার বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে তাদের (ভারত) নৈতিক সমর্থন সবসময় অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে। আর আমরা জানিয়েছি যে, আমাদের সাংগঠনিক অবস্থা আগের থেকে অনেক ভালো। আগামীতে আমরা সরকার গঠন করতে পারব।’
জাতীয় পার্টির ভূমিকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুষমা স্বরাজ প্রশংসা করেছেন বলেও জানান হাওলাদার। বলেন, ‘তিনি (সুষমা) বলেছেন, বিরোধী দলে থেকেও জাতীয় পার্টি সরকারে দায়িত্ব পালন করে বিরল দৃষ্টান্ত গড়েছে।’
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত রাখতে জাতীয় পার্টির সোচ্চার থাকবে বলেও জানান দলের মহাসচিব। বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আমরা পাইনি, তবুও নির্বচন থেকে কখনো সরে দাঁড়াইনি। অত্যন্ত বিরুপ পরিস্থিতির মধ্যেও জাপা নির্বচনে অংশগ্রহণ করেছে।’
বরিশালে সাদিককে সমর্থনের কারণ
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েও শেষ পর্যযন্ত আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ না থাকায় ব্যালটে লাঙ্গল মার্কা থেকে যাবে।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ হিসেবে দলের মহাসচিব বলেন, ‘আমরা মনে করি বরিশাল সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার প্রয়োজন আছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে কাজ করার জন্য বরিশালের সমস্ত জাপা নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছি।’
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী এবং সিলেটের পাশাপাশি ভোট হবে বরিশালেও। সেখানে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীক দিয়েছে ইকবাল হোসেন তাপসকে।